ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলাসহ ১৫ মামলায় গ্রেফতারকৃত সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন (৪৫) ঢাকার কেরানীগঞ্জে অবস্থিত কেন্দ্রীয় কারাগারে আত্মহত্যা করেছেন।
রোববার (১৪ জুন) সকাল ১১টার দিকে কারাগারের সূর্যমুখী ভবনের একটি কক্ষে নিজের গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। পরে তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুপুর সাড়ে ১২টা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এক কারাবন্দিকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। আনার পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহটি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তার সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা যায়, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সুজন সাধারণ একটি কক্ষে বন্দি ছিলেন এবং নিজের ব্যবহৃত গামছা দিয়েই ফাঁস দেন। কক্ষটিতে থাকা তিন বন্দির মধ্যে একজন আদালতে গিয়েছিলেন ও অপরজন ঘুমিয়ে ছিলেন, সেই ফাঁকে সুজন আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন বলেন, একটি কক্ষে তিনজন বন্দী থাকতেন। এদের মধ্যে একজন মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন আর একজন ঘুমিয়ে ছিলেন। সেই সুযোগে সুজন নিজে গলায় গামছা পেচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে বিষয়টি জানতে পেরে প্রথমে তাকে কারা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, সাইদুর রহমান সুজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইন ও আইসিটিসহ অন্তত ১৫টি মামলা রয়েছে। যতটুকু আমরা জানি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল।
উল্লেখ্য, ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সুজন আত্মগোপনে চলে যান। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ২০২৫ সালের জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাকে গ্রেফতার করে। এরপর থেকেই কারাবন্দি ছিলেন তিনি।
মন্তব্য করুন