ডেস্ক রিপোর্ট
১৮ মে ২০২৫, ৬:৪৩ অপরাহ্ন
অনলাইন সংস্করণ

মানবেতর জীবন যাপন জুলাই শহীদ আমিরের স্ত্রী-সন্তানের

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল পুরো দেশ। বিক্ষোভ দমনে কারফিউ জারি করে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু ক্ষুধার তারণায় বসে থাকতে পারেননি রিকশাচালক আমির হোসেন তালুকদার।

রাজধানীর রামপুরা এলাকায় পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি এবং ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বের হয়েছিলেন রুটিরুজির খোঁজে। স্ত্রী-সন্তানের জন্য রোজগার করে ঘরে ফেরার কথা থাকলেও তা আর হয়নি, গুলি করে তার ক্ষুধা চিরতরে মিটিয়ে দিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, গত বছরের জুলাই মাসে দেশের যে কয়েকটি স্থান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রণক্ষেত্রে রূপ নিয়েছিল তার অন্যতম ছিল রামপুরা। সেখানে ছাত্র-জনতার কাছে ধরাশায়ী হয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। ১৯ জুলাই পেটের দায়ে সেই রণক্ষেত্রে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হয়েছিলেন বরগুনার তালতলীর মৌপাড়া গ্রামের মৃত্যু আলতাফ তালুকদারের ছেলে আমির।

দিনটি শুক্রবার হওয়ায় দুপুরে টিভি সেন্টার এলাকায় রাস্তার পাশে রিকশা রেখে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে রিকশা নিয়ে আবার রাস্তায় উঠতেই তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় পুলিশ। লুটিয়ে পড়েন সড়কে। ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। খবর পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করেন স্বজনরা। ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ গ্রামে নিয়ে দাফন করতে বাধ্য হন তারা।

আমিরের মৃত্যুর পর থমকে যায় তার সংসারের চাকা। পরিবারের একমাত্র উপার্জক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে তিন সন্তান নিয়ে মহাবিপাকে পড়েন তার স্ত্রী আন্নি আক্তার। তার স্বামীর মৃত্যুর সঙ্গে গতি হারিয়েছে রিকশার চাকা, চলছে না সংসার। কোনো আর্থিক সাহায্য না পাওয়ায় অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন তারা। আত্মীয়স্বজনের সহায়তায় কোনোরকমে খেয়েপরে বেঁচে থাকার সংগ্রাম করছেন আন্নি।

তিনি বলেন, ‘আমার আর কিছুই রইল না। স্বামী পুলিশের গুলিতে মারা না গিয়ে আমি মারা গেলে অন্তত সন্তানদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়ত না। তিন সন্তান নিয়ে অথই সাগরে পড়ে গেছি। তাদের খাওয়াপরা শিক্ষা দেওয়ার মতো অর্থ আমার হাতে নেই। কীভাবে তাদের লালনপালন করব- সেই চিন্তা সারাক্ষণ আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। সরকারি সহায়তা পেলে দুমুঠো খেয়েপরে বাঁচতে পাড়তাম, সন্তানরা লেখাপড়া করতে পারত।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম বলেন, আমির হোসেন দীর্ঘদিন ঢাকায় রিকশা চালিয়ে সংসারে সচ্ছলতা আনার চেষ্টা চালিয়েছেন। জুলাই বিপ্লবের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছে তার পরিবারের সদস্যরা। জরুরিভিত্তিতে তাদের আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। একই সঙ্গে একটি স্থায়ী ব্যবস্থা হলে তিনটি শিশুর বেড়ে ওঠা সহজ হতো।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন, ‘নিহত আমির হোসেনের বাড়ি পরিদর্শন করেছি। তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।’

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ ১৬ নেতার পদত্যাগ

তারুণ্যের সমাবেশ সফলে সিলেট বিভাগ বিএনপির প্রস্তুতি সভা

ভেঙ্গে পড়া শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো সময়ের দাবি : মিফতাহ্ সিদ্দিকী

ভারতের বিরুদ্ধে তদন্তে জাতিসংঘ

সাহায্য-সহযোগিতায় চলছে জুলাইয়ের শহীদ হাসানের সংসার

সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে শাহবাগে আড়াই ঘন্টা অবস্থান করে ছাত্রদল

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করেছে, ফলে দলটি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না: প্রধান উপদেষ্টা

গুলিস্তানে মিছিলের চেষ্টা, আওয়ামী লীগের ১১ নেতাকর্মী গ্রেফতার

৩ হাজারের অধিক কবর খোঁড়া মনু মিয়ার ঘোড়াটি মেরে ফেলল দুর্বৃত্তরা

মানবেতর জীবন যাপন জুলাই শহীদ আমিরের স্ত্রী-সন্তানের

১০

ডেথ ওভারের কিং মুস্তাফিজ

১১

জুলাই এর ডেবিল যুবলীগ নেতা পেলেন জুলাই যোদ্ধা অনুদান

১২

‘ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা মেয়ের ইশরাক সমর্থকদের

১৩

২ লাখ টাকা বেতনে আন্তর্জাতিক সংস্থায় চাকরি, আছে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও

১৪

সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ, আবেদন করুন এখনই

১৫

দুদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ চিন্ময় দাস এর

১৬

রিজার্ভ চুরি মামলার প্রতিবেদন জমার তারিখ আরেক ধাপ পেছাল

১৭

ইসরাইলকে এআই সহায়তা করেছিল মাইক্রোসফট

১৮

বর্বর ইসরাইলি বোমাবর্ষণে ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২৫ ফিলিস্তিনি নিহত

১৯

আমরা বাণিজ্য উদারীকরণে বিশ্বাসী – শেখ বশিরউদ্দীন

২০