■ হলি আর্টিজান হামলা
মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যে কারণে সাত আসামির ‘আমৃত্যু কারাদণ্ড’রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলা মামলায় সাতজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে কি কারণে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে এ মামলার সাত আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে হাইকোর্টের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
কেন মৃত্যুদণ্ড থেকে সাত আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, সে ব্যাখ্যায় হাইকোর্ট রায়ে বলেছেন, ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও এই সাত আপিলকারী ষড়যন্ত্র ও ঘটনায় সহায়তা করেছেন, যা সন্দোতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
ষড়যন্ত্র ও ঘটনায় (জঙ্গি হামলা) সহায়তার কারণে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ৬ এর ১ উপধারা (ক) (আ) দফায় বর্ণিত অপরাধে তারা দোষী। কিন্তু সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট ধারা-উপধারার সঠিক উপলব্ধি না করে আপিলকারীদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন, যা সঠিক ও গ্রহণযোগ্য নয়। যে কারণে উক্ত রায়টি হস্তক্ষেপযোগ্য।’
মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, উভয় পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্যের পর্যালোচনা তুলে ধরে রায়ে বলা হয়েছে, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯-এর ৬(১) (ক) (অ) (আ) ধারায় বর্ণিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে গণ্য করে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে দণ্ডিতদের উক্ত আইনের ৬(২) (আ) ধারায় বর্ণিত শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হল।
তবে হত্যাকাণ্ডের নির্মমতা, নৃশংসতা, ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে সন্ত্রাসীদের সামগ্রিক নিষ্ঠুর আচরণ এবং এ ঘটনায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়া বিবেচনায় নিয়ে আসামিদের প্রত্যেককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে বলে আমরা মনে করি।’
উচ্চ আদালত রায়ে বলেন, ‘বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ রদ ও রহিত করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২)(আ) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের প্রত্যেককে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো পাঁচ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হল।’
মন্তব্য করুন