‘আমি একজন প্রবাসী। অভিমান করে বাড়ি যাই নাই। মা-বাবার সাথে অভিমান করে কথা হয় নাই প্রায় চার মাস। মনে করেছিলাম আর যাব না দেশে বা বাড়ি। আমি এই নাটক দেখার পরে মনে হচ্ছে সবকিছুর পর তো মা বাবা। আমি বাড়ি যাচ্ছি খুব শিগগিরই। প্রস্তুতি শুরু করলাম আজ থেকে। ধন্যবাদ নাটকের পুরো টিমকে।’
সাব্বির হোসেন নামের এক প্রবাসী দর্শক ক্ষতিপূরণ নাটকের কমেন্টবক্সে লিখেছেন এই কথা।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে মুক্তি পাওয়া মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত ইউটিউব ফিল্ম ‘ক্ষতিপূরণ’ ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে ফিকশনের মধ্যে দুই নম্বরে আছে। গত ১০ জুন সিনেমাওয়ালা চ্যানেলে মুক্তি পেয়েছে এটি। এতে মা-বাবার প্রতি সন্তানের যত্নশীল হওয়ার ও মানুষের উপকারে সাধ্যমতো এগিয়ে আসার বার্তা দেওয়া হয়েছে। ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই ইউটিউব ফিল্ম সাব্বির হোসেনের মতো দেশ-বিদেশের অসংখ্য দর্শকের জীবন-দর্শন বদলে দিচ্ছে। কমেন্ট দেখলেই বোঝা যায়, মানুষের উপকারে এগিয়ে আসতে ও গ্রামের বাড়িতে মা-বাবার কাছে যেতে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে ‘ক্ষতিপূরণ’।
ইউটিউব ফিল্মটি কাউকে কাউকে কাঁদিয়েছে, আবেগপ্রবণ করে তুলেছে। প্রেমের গল্পের ভিড়ে এমন বিষয়বস্তুর নাটক উপহার দেওয়ায় প্রশংসায় ভাসছেন নির্মাতা রাজ।
‘ক্ষতিপূরণ’ রচনা করেছেন সিদ্দিক আহমেদ। এর গল্প এক সহৃদয় তরুণকে ঘিরে। কেউ জানে তার নাম ত্রিস্তান, কেউবা ডাকে কাফকা কিংবা তলস্তয়, কেউ আবার বলে হুমায়ূন আহমেদ! আসলে সে কে? তার প্রতি কৌতূহলী হয়ে ওঠে সাংবাদিক শিরিন। কিন্তু লোকটাকে দরদি মনে হলেও সামনে আসে এক নিষ্ঠুর অতীত। ছেলেটির চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইয়াশ রোহান। শিরিন চরিত্রে আছেন অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর বোন মালাইকা চৌধুরী। এটি তার দ্বিতীয় ফিকশন।
ইউটিউব ফিল্মটি চার দিনে দেখা হয়েছে ৪৩ লাখেরও বেশিবার। এতে মন্তব্য পড়েছে ৬ হাজারের বেশি। সজিব দরিয়া নামের আরেক প্রবাসীর কথায়, গল্পটি কিছুটা নিজের জীবনের সঙ্গে মিলে গেল। ‘ক্ষতিপূরণ’ দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। আট বছর হয়ে গেল প্রবাসে আছি। দাদি আমাকে হাজারবার দেখতে চেয়েছেন, অনেকবার বাড়ি যেতে বলেছেন। কিন্তু সমস্যার কারণে বাড়ি যেতে পারিনি। সেই দাদি মারা গেছেন দেড় বছর হবে। এখন মা ঠিক দাদির মতো প্রতিনিয়ত আমাকে বাড়ি যেতে বলেন। কিন্তু আমার সমস্যার কারণে যেতে পারি না। বুক ফেটে যায় মাকে দেখার জন্য। মা এমন একটা মায়া যা পৃথিবীর অন্য কোনো কিছুতে পাওয়া যায় না। মায়ের ভালোবাসার কাছে সবকিছু তুচ্ছ।
সায়মা সামিরা নামের একজন লিখেছেন, আমার মা মারা গেছেন পাঁচ মাস। ‘ক্ষতিপূরণ’ দেখে আমার মায়ের কথা মনে পড়ে। কবরের পাশে যখন ইয়াশ রোহান কাঁদছিলেন, সেই দৃশ্য দেখে কান্না চলে এলো। সকল মা-বাবা ভালো থাকুক।
ইউটিউব ফিল্মটির আবহ সংগীত তৈরি করেছেন আরফিন রুমি। এ ছাড়া নতুন একটি গানের সুর-সংগীত পরিচালনা করেছেন তিনি। তার সঙ্গে এটি গেয়েছেন স্বর্ণা। ‘লিখেছি তোমার নাম’ শিরোনামের গানটি লিখেছেন রবিউল ইসলাম জীবন। চিত্রগ্রহণ করেছেন রাজু রাজ। সম্পাদনা ও রং বিন্যাসে রাশেদ রাব্বি।
মন্তব্য করুন