মানিকগঞ্জে হত্যা ও ভাঙচুরের দুটি মামলায় কণ্ঠশিল্পী ও সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আব্দুন নূর এ রায় দেন। এতে হত্যা মামলায় চারদিন ও ভাঙচুরের মামলায় দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এর আগে, সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মানিকগঞ্জ আদালতে হাজির করা হয় মমতাজকে।
এ সময়, আদালত থেকে বের করে প্রিজনভ্যানে তোলার সময় তাকে লক্ষ্য করে ডিম ও জুতা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
এর আগে, গত ১৩ মে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় করা সাগর হত্যা মামলায় মমতাজ বেগমের চার দিন রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। ১২ মে দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে তাঁকে আটক করার পর এ রিমান্ডের আবেদন করা হয়।
মমতাজ বেগম মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য মমতাজ বেগম ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। সে বছরই নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনীত হয়ে সংসদ সদস্য হন। এরপর থেকে এলাকায় তার রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার অভিযোগ উঠে। ২০১৪ সালে সরাসরি মানিকগঞ্জ-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৫ সালে হন সিঙ্গাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এই সময় থেকেই তাঁর ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে পরিবহন চাঁদাবাজি, সরকারি টেন্ডার বাণিজ্য, চাকরির নিয়োগ ও দলে পদ বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারো এমপি হন। তবে ২০২৪ সালের দ্বাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে পরাজিত হন তিনি। তবে এখনো তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদে রয়েছেন। তাঁর সৎ ছেলে সিঙ্গাইর পৌরসভার মেয়র এবং ভাগনে শহিদুর রহমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ ছাড়া বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন দলীয় পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর থানায় একটি হত্যামামলা এবং হরিরামপুর থানায় হামলা, মারধর ও ভাঙচুরের মামলায় তিনি প্রধান আসামি। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে আরও একাধিক মামলা রয়েছে।বর্তমানে এসব মামলার তদন্ত চলমান। সংসদ সদস্য থাকাকালে তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে সংসদে অরুচিকর মন্তব্য এবং গান গেয়ে আলোচিত-সমালোচিত হন।
মন্তব্য করুন