সম্প্রতি বিআইএফএ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। হাসিনা সরকার পতনের পর মাঝে দীর্ঘ সময় কিছুটা আড়ালে থাকার চেষ্টা করলেও এই পুরস্কার নিতে সমাবেশে দেখা গেছে তাকে। অথচ, তার বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা। অনুষ্ঠানে তার হাতে পুরস্কার তুলে দিতে দেখা যায় বিএনপির অন্যতম তরুণ নেতা ইশরাক হোসেনকে। বিষয়টি নিয়ে এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছেন সাংবাদিক, লেখক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান।
সোমবার সকালে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন মারুফ কামাল খান। পোস্টে একটি দৈনিক গণমাধ্যমের ২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারির একটি নিউজের স্ক্রিনশট জুড়ে দিয়েছেন তিনি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সময় অবরুদ্ধ খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করেন চঞ্চল চৌধুরীসহ অন্যান্য শিল্পীরা। তারা দাবি করেন, খালেদা জিয়া পেট্রোল বোমা হামলা করেছেন এবং সেগুলো যেন তিনি বন্ধ করেন।
সেই সময়ের দুঃসহ অভিজ্ঞতা এবার পোস্টে তুলে ধরেছেন মারুফ কামাল খান। এই সময়ে এসে চঞ্চলের হাতে এই পুরস্কার দেখা তার জন্য কতটা কষ্টের সে কথাও জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক এই প্রেস সচিব।
মারুফ কামাল খান তার পোস্টে লিখেছেন, ‘এই ছবিখানা দেখিয়া মনটা বড়ই বিগড়াইয়া গেল। বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাজ করতাম তখন। তিনি এবং আরো অনেকের সঙ্গে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন অফিসে আমিও আটকা পড়েছিলাম। শেখ হাসিনার অনুগত পুলিস বাইরে থেকে তালা মেরে আমাদেরকে তিন মাস অবরুদ্ধ করে রেখেছিল।’
কঠিন সেই সময়ের কথা জানিয়ে তিনি লেখেন, ‘নন্দিত নেত্রী ম্যাডাম জিয়ার ওপর পুলিস পিপার স্প্রে ছুঁড়েছিল। আমাদের অনেকের গায়ে ও চোখে মুখে সে স্প্রে লেগেছিল। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ফোন, ইন্টারনেট, গ্যাস, পানি এবং অবশেষে বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল। কিছুদিন বাইরে থেকে খাবারও ঢুকতে দেওয়া হোতো না। চিড়া-মুড়ি ও অন্যান্য শুকনা খাবার খেয়ে জীবন বাঁচাতে হয়েছে। ভয়ংকর আতঙ্কের সে ছিল এক বীভৎস সময়। সে সময়েই আমি নিজে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ি।’
মারুফ কামাল খান আরও লিখেছেন, ‘আমাদেরকে আটকে রেখে আসামী করা হয় নরহত্যা, বোমাবাজি, অগ্নিসংযোগ, হামলার অসংখ্য মামলায়। প্রতিনিয়ত ছিল পুলিস ও গুণ্ডাদের ভেতরে ঢুকে হামলা চালাবার আস্ফালন। ফ্যাসিস্ট সরকারের সন্ত্রাসী নেতা-কর্মীরা এসে রোজ ঘেরাওয়ের মহড়া চালাত। নানা হুমকি দিতো।’
চঞ্চল চৌধুরীসহ আলোচিত অভিনেতাদের ভূমিকার কথা জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘এই চঞ্চল চৌধুরীসহ লীগের কিছু নট-নটীও এসেছিল আমাদেরকে ঘেরাও করতে। ওরা অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলেছে, তিন মাস ধরে অবরুদ্ধ থেকে আমরা নাকি অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়েছি! ওরা দাবি করেছে আমাদের কঠিন সাজা দিতে হবে।’
পোস্টের শেষাংশে তিনি লিখেছেন, ‘এগুলো কি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ছিল? এখন সংস্কৃতির নামে ওদের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে দেখলে খুব কষ্ট হয়, ভারি কষ্ট! এ কষ্টের কথা কাউকে বলে বুঝানো যাবে না।’
সম্পাদক:
উপ-সম্পাদক:
যোগাযোগের ঠিকানা: 05 Rue Lally-Tollendal, 75019 Paris.
ফোন:
বিজ্ঞাপন বিভাগ:
ই-মেইল: infosylbdnews24@gmail.com