তবে এবার নানান রোগব্যাধি ও বার্ধক্যজনিত কারণে কাবু হয়ে ঢাকার বাংলাদেশ মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন ৬৯ বছর বয়সী মনু মিয়া। এমন পরিস্থিতিতে বাড়ি-ঘর এবং সেই ঘোড়া-টিকে ফেলে রেখে সহধর্মিণীও তার সঙ্গী হয়েছেন। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন মনু মিয়া।
আর এই সুযোগে বৃহস্পতিবার দিবাগত-রাতের কোনো এক সময় রহস্যজনক কারণে দুর্বৃত্তরা মনু মিয়ার ঘোড়াটিকে পার্শ্ববর্তী মিঠামইন উপজেলার কাটখাল ইউনিয়নের হাসিমপুর এলাকায় নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে রাস্তার পাশের খাদ-ডোবায় ফেলে রাখে। প্রচুর রক্তক্ষরণে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে ঘোড়াটি। মৃত অশ্বের মুখ দেখে চমকে ওঠে আশপাশের গ্রামের লোকজন। সকলেই চিৎকার করে বলে ওঠে ‘আরে এযে আমরার গোরখোদক মনু মিয়ার ঘোড়া’।
দুই ভাই ও তিন বোনের সংসারে মনু মিয়া তৃতীয়। কবর খোঁড়ার কাজে বাহন হিসেবে এ পর্যন্ত তিনি চৌদ্দটি ঘোড়া কিনেছেন। আর এ জন্য বিক্রি করতে হয়েছে তার পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি। পৈত্রিক অন্য সম্পত্তি বন্ধক দিয়েই চলছিল নিঃসন্তান মনু মিয়ার সংসার ও কবর খোঁড়ার কাজ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে কবর খোঁড়ার কাজ করতে খুন্তি-কোদাল, দা, চাকু, স্কেল আর করাত ইত্যাদি ভর্তি বস্তাসহ হাওড়ের বন্ধুর পথে ঘোড়ায় চড়ে পৌঁছেন তিনি।
কবর খোঁড়ার সেই নিখুঁত কারিগর রাজধানী ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তখন-ই তার ঘোড়াটি হত্যাকাণ্ডের শিকার হলো। কিন্তু শারীরিক দিক বিবেচনায় এখনও মনু মিয়াকে তার ঘোড়ার মৃত্যুর কথা জানানো হয়নি।
এ বিষয়ে কথা হলে ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাফর ইকবাল জানান, রোববার সকাল পর্যন্ত ওই ঘোড়া হত্যার বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ নিয়ে আসেননি। অভিযোগ পেলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
মন্তব্য করুন