সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে চলমান অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সংগঠনের সভাপতি হাজী মো. ময়নুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুহিম।
শনিবার (১৭ মে) দুপুরে সিলেট নগরীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টর কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা বলেন, সংগঠনের সাম্প্রতিক নির্বাচনে পরাজিত একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও নগরীর বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমরা পরিবহন শ্রমিকদের নিয়ে কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।
নেতৃবৃন্দ জানান, দায়িত্ব গ্রহণের সাড়ে তিন বছরের মাথায় ১৩০ জন নিহত শ্রমিক পরিবারের মাঝে ৫০ হাজার টাকা করে মোট ৬৫ লাখ টাকার নগদ অনুদান প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া শ্রমিকদের কল্যাণে কদমতলী টার্মিনালের পাশে ১ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি জায়গাও ক্রয় করা হয়েছে, যা সিলেটের পরিবহন ইতিহাসে নজিরবিহীন।
সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করে বলেন, পরাজিত একটি চক্র মিথ্যা দলীয় পরিচয় দিয়ে আমাদের চরিত্র হননের চেষ্টা চালাচ্ছে। সংগঠনের সভাপতি ময়নুল ইসলামকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের ১ নম্বর সদস্য এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মুহিমকে গোলাপগঞ্জ উপজেলা শ্রমিক লীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবে মিথ্যাভাবে প্রচার করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বানোয়াট। আমরা কখনোই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না।
তাঁরা আরও বলেন, ৫ আগস্ট পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পরও ফেসবুকে বিভিন্ন আইডি থেকে আমাদের নামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, বিভিন্ন স্থানে পোস্টার লাগানো হয়েছে। এতে সাধারণ পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কর্মবিরতির মতো কঠোর কর্মসূচিতে যেতে পারে, যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলনে শ্রমিকরা পরোক্ষ সমর্থন দিলেও নিরাপত্তার কারণে তারা সরাসরি অংশ নিতে পারেননি। তবে ৫ আগস্ট টার্মিনালের শত শত যানবাহন ও শ্রমিকদের নিরাপত্তায় তাঁরা সারাদিন অবস্থান করেছিলেন। সেই ঘটনাও এখন বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়রামিথ্যা প্রচারকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
নেতারা বলেন, ‘আমরা সিলেটের পরিবহন শ্রমিকদের স্বার্থে অতীতেও কাজ করেছি, এখনো করছি এবং আগামীতেও করব। কিন্তু দলীয় রাজনীতির অপপ্রচারের মাধ্যমে একটি ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক সংগঠনকে বিভক্ত করার চেষ্টা কখনোই সফল হবে না।’
সাধারন সম্পাদক আব্দুল মুহিম তার বক্তব্যে বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের কাছে সারাদেশের সকল মানুষের ন্যায় পরিবহন সেক্টরের মানুষজনও জিম্মি ছিলাম। এজন্য বিভিন্ন সময় পরিবহন শ্রমিকদের স্বার্থে আমাদেরকে আওয়ামী সরকারের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বাধ্য হয়ে বসতে হয়েছে। এরপরও আমরা বিএনপি-জামায়াতসহ সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করে চলেছি এবং বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে কোনো উস্কানিমূলক বক্তব্য কখনো প্রদান করিনি। কিন্তু কুচক্রি মহল বিগত সময়ের ছবি দিয়ে অনলাইন প্লাটফর্ম ফেসবুকে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও অপপ্রচার। বাস্তবে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক রকউই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না।
ইউনিয়নের নেতাদের বিরুদ্ধে ‘অপপ্রচারকারীদের’ দ্রুত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার রজার দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন